নিজস্ব প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, আল্লাহর বিধান প্রতিপালন ও প্রিয় নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাতের অনুসরণই দুনিয়ার শান্তি ও পরকালে মুক্তির একমাত্র পথ। পবিত্র কুরআনের বর্ণনায়- প্রিয় নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভালোবাসা মুমিনের ইমান; আর তাঁর রেখে যাওয়া আদর্শ তথা, সুন্নাতের অনুসরণই হচ্ছে তাকে ভালোবাসার প্রমাণ।
আজ সকালে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
আহলা দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন আলহাজ্ব হয়রত মওলানা শাহসূফি সৈয়দ মুহাম্মদ এমদাদুল ইসলামের ম.জি.আ.) সভাপতি আলোচনায় অংশ নেন মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ মাইনুল ইসলাম জুনায়েদ,বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল, আলহাজ্ব শহিদুল ইসলাম বাবুল, হাজী সেলিম আহমেদ সালেম প্রমুখ।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, বিশ্ব জাহানের স্রষ্টা এবং প্রতিপালক মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বিশ্ববাসী সকল সৃষ্টির ইহকালীন শান্তি ও পারলৌকিক মুক্তির জন্য মহানবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পাঠিয়েছিলেন এই ধরাধামে। প্রথম নবী হযরত আদম আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে নবুয়তের ধারাবাহিকতায় তিনি এ পৃথিবীতে আগত সর্বশেষ নবী এবং রাসূল। তাঁর আগমনে গোটা বিশ্বজাহান আনন্দে উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছিল। আকাশে বাতাসে ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হয়ে উঠেছিল মুক্তির বারতা। তাঁর আগমনে স্রষ্টাকে ভুলে যাওয়া মানব জাতি নতুন করে সন্ধান পেয়েছিল মুক্তিপথের। তাওহিদের অমিয় বাণী কালিমা ‘লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ তথা ‘এক আল্লাহ ব্যতিত আর কোন উপাস্য নেই’ – এই মহাসত্যের বুলন্দ আওয়াজ ছড়িয়ে পড়েছিল জগতময়। সত্যের পথে, শান্তির পথে, মুক্তির পথে ফিরে আসার সুযোগ লাভ করেছিল জগতবাসী। লাত, মানাত, উযযা, হুবলদের মত মিথ্যে এবং অসার উপাস্যদের বিদায়ের বারতা ঘোষিত হয় বিশ্বময়। মানব সৃজিত অন্ধকার এবং পঙ্কিলতার পথ ছেড়ে বনি আদম পুনরায় মাথা নত করার শিক্ষা লাভ করে এক আল্লাহর সামনে। আজকের বিশ্ববাসীর কল্যান ও মুক্তিও তাঁর রেখে যাওয়া সুমহান আদর্শ ধারণ করার মধ্যেই। সেই মহান আদর্শের ছায়াতলেই হোক আমাদের পথচলা।
সাংবাদিকদের এ নেতা বলেন, হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন ইনসানে কামিল বা পরিপূর্ণ মানব। মানবীয় অবয়বে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ’লার গুণাবলি যতটুকু ধারণ করা সম্ভব, তার সর্বোচ্চ সমাহার ঘটেছিল মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মধ্যে। আয়শা রাদিআল্লাহু তাআ’লা আনহার বাচনিকে, ‘প্রিয় নবীজীর জীবন ছিল জীবন্ত কুরআন’। তাঁর শুভাগমনে ইসলামের পরিপূর্ণতা ঘটেছে।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন,হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুমহান আদর্শ ও সর্বোত্তম চরিত্র অনুসরণ করার মধ্যেই সফলতা, স্বার্থকতা, মুক্তি এবং চূড়ান্ত কামিয়াবি। ইহকাল পরকালে সফলতা ও নাজাতের জন্য বিশ্ববাসী প্রত্যেকের জন্য তাঁর অনুসরণই একমাত্র কর্তব্য।
তিনি নবী মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইতিহাসের অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব উল্লেখ করে বলেন, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও তাঁকে মানবজাতির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সংস্কারক ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী বিখ্যাত পণ্ডিত মাইকেল এইচ হার্ট তার বহুল আলোচিত ‘দ্য হান্ড্রেড’ গ্রন্থে হজরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ’ হিসেবে স্থান দিয়েছেন। ব্রিটিশ মনীষী সাহিত্যিক জর্জ বার্নার্ড শ বলেছেন, এই অশান্ত পৃথিবীতে তার মতো একজন মানুষের প্রয়োজন। তিনি বেঁচে থাকলে পৃথিবী জুড়ে সুখের সুবাতাস বইত। তার আগমনে যে বিপ্লবের সূচনা হয়েছিল, দুনিয়া জুড়ে তা বিস্তৃত হয়েছে।
ইসলাম প্রতিশোধে বিশ্বাস করে না উল্লেকগ ক করে তিনি বলেন, পৃথিবীর তাবত আদর্শ এবং মতবাদ খুঁজেও এর দ্বিতীয় একটি নজির পাওয়া যাবে না। ইসলামের শিক্ষা, ‘প্রতিবাদের শ্রেষ্ঠ পন্থা উত্তম আচরণ’। প্রিয় নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সারা জীবনের আদর্শ ছিল এটাই। মন্দের প্রতিবাদ তিনি কোনদিন মন্দ কাজ দিয়ে করেননি। প্রতিশোধ নেয়ার ক্ষেত্রে তাঁর সারা জীবনের চরিত্র ছিল উত্তম এবং শ্রেষ্ঠতম আচরণ প্রদর্শন করতেন। ঘোরতর শত্রুদের সাথেও সর্বাবস্থায় তিনি ছিলেন কোমল এবং সর্বোত্তম আচরণের মূর্ত প্রতীক।